আজকে আপনাদের জানাবো অনলাইনে কিভাবে পাসপোর্ট এর আবেদন করবেন বা ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ এবং পাসপোর্ট এর বিভিন্ন তথ্য। বিশ্বের সব উন্নত দেশগুলোর মত আমাদের দেশেও চালু হয়ে গেছে এই পাসপোর্ট সেবা। এতে করে আমাদের দেশের মানুষ এর ভোগান্তি অনেকটা কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ । ই-পাসপোর্ট: আবেদন প্রক্রিয়া, খরচ, এবং সুবিধাসমূহ
ই পাসপোর্টে কোন জালিয়াতি করার কোন সুযোগ থাকবে না। এটি সম্পূর্ণ যান্ত্রিক উপায়ে পরীক্ষা করা হয়।
ই পাসপোর্ট এর অনেক সুবিধা রয়েছে। ই পাসপোর্ট দ্বারা ভ্রমণকারীরা এর মাধ্যমে সহজ ও দ্রুত সময় ভ্রমণ করতে পারবেন। বর্তমানে আমাদের দেশেও বিমানবন্দরে ই গেট সেবা চালু করা হয়েছে।
এর ফলে বিমানবন্দরে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর কোন প্রয়োজন পড়বে না এবং দ্রুত ইমিগ্রেশন শেষ করা যাবে। চলুন জেনে নেই ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ।
পাসপোর্ট সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে যেমন:
- সাধারণ পাসপোর্ট সবুজ কালারের হয়ে থাকে
- দাপ্তরিক পাসপোর্ট নীল কালারের হয়ে থাকে
- কূটনৈতিক পাসপোর্ট লাল কালারের হয়ে থাকে
ই পাসপোর্ট এর ধাপসমূহ
- প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট প্রস্তুত করা।
- অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদন ফরম পূরণ করা।
- অনলাইনে আবেদন ফ্রম ও ব্যাংক জমা স্লিপ প্রিন্ট প্রস্তুত রাখা।
- ব্যাংকের পাসপোর্ট ফ্রি জমা দেওয়া।
- তারপর আবেদনে ফর্মটি ও ব্যাংক জমা স্লিপসহ পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে।
- তারপর তারিখ অনুযায়ী আপনাকে ছবি ও ফিঙ্গার দিতে হবে।
- পুলিশ ভেরিফিকেশন।
- মোবাইল ও ইমেইলে মেসেজ গ্রহণ ও ওয়েবসাইটে চেক করা।
- শেষের ধাপ পাসপোর্ট সংগ্রহ করা।
অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদন
ই পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য প্রথমে আপনাকে এই (www.epasport.gov.bd) ওয়েবসাইটে যেতে হবে। ওয়েবসাইটে ঢুকে ডিরেক্টলি টু অনলাইন এপ্লিকেশন এ ক্লিক করতে হবে।
প্রথমে আপনার বর্তমান ঠিকানার জেলা শহরের নাম ও থানার নাম নির্বাচন করতে হবে। তারপর ব্যক্তিগত তথ্য সম্মিলিত ই পাসপোর্ট এর মূল ফর্মটি পূরণ করে সাবমিট করতে হবে।
তৃতীয় ধাপে পাসপোর্ট এর মেয়াদ ও পৃষ্ঠা সংখ্যা অনুযায়ী আপনাকে পাসপোর্টের ফি জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে যেকোনো ব্যাংকের ডেবিট অথবা ক্রেডিট কার্ড দিয়ে অনলাইন পেমেন্ট করা যাবে অথবা আপনি ব্যাংকে গিয়েও সরাসরি জমা করতে পারবেন।
ব্যাংকে টাকা জমা করার পর সেই জমা স্লিপ এর নাম্বার এখানে দিতে হবে। এরপরে ফাইল সাবমিট করে দিবেন। এর ফলে আপনার তথ্যগুলো পাসপোর্ট কার্যালয় সার্ভারে সরাসরি চলে যাবে।
তারপর জাতীয় পরিচয় পত্রসহ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট দিয়ে বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদানের জন্য আপনাকে আপনার নির্দিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে।
সে ধাপে ই পাসপোর্ট প্রস্তুতির পর আবেদনকারীকে জানানো হবে। সেটা আপনি অনলাইনে মাধ্যমে দেখতে পাবেন আপনার পাসপোর্টটি প্রস্তুত হয়েছে কিনা অথবা আপনার দেওয়া নাম্বারে এসএমএস করে জানিয়ে দেওয়া হবে।
এছাড়াও পাসপোর্ট অফিস থেকে ই পাসপোর্ট এর কাগজ জমা দিয়ে ফরম পূরণ করেও নিতে পারেন ই পাসপোর্ট। এখানে আপনাকে ৮৭ ধরনের তথ্য চাওয়া হবে। এটা আগের পাসপোর্টে থেকে এই ফর্মটা কিছুটা আলাদা। এই ফোমের ম্যাপ থাকে পাশ থেকে দশ বছর এবং পাতা সংখ্যা থাকে ৪৮ থেকে ৬৪ পৃষ্ঠা।
ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে
- জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
- ই পাসপোর্ট এর অনলাইন আবেদনের কপি
- আগের পাসপোর্ট এর ফটোকপি এবং আসল পাসপোর্ট
- মা বাবার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
- আপনার ঠিকানা যাবতীয় কাগজ প্রমাণপত্র বা ইলেকট্রিসিটি বিল এর কপি
- আপনার পেশাগত সার্টিফিকেট এর ফটোকপি বা চাকরির আইডি কার্ড
- নাগরিকত্ব সনদ ও চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট
পাসপোর্ট অফিসে যাওয়ার সময়
পাসপোর্ট করার আবেদন পত্র জমা দেওয়ার সময় সব সার্টিফিকেটের মূল কপি সাথে নিয়ে যাবেন। পাসপোর্ট অফিস সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১.৩০ টা পর্যন্ত পাসপোর্ট ফরম জমা নেয়।
তবে অবশ্যই আগে আগে যাওয়া ভালো কারণ সাধারণত অনেক লম্বা লাইন থাকে। সাধারণত ফরম জমা নেওয়ার সময় আপনাকে কিছু প্রশ্ন করা হবে এবং তার যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসের সাথে আপনি ডকুমেন্ট অনুযায়ী সঠিক উত্তরগুলো দিবেন।
ফরম জমা দেওয়ার সময় ছবি তোলার জন্য সাদা রং বাদে অন্য কোন রঙের কাপড় পড়ে যাবেন,অবশ্যই ফরমাল ড্রেসে যাবেন।
অনেক সময় ফোন জমা নেওয়ার জন্য অযৌক্তিক প্রশ্ন করবে বা কোন কারণ ছাড়াই ফরম জমা নিতে চায় না। এক্ষেত্রে ঊর্ধ্বত কোন কর্মকর্তার সাথে কথা বললে আপনি তার কাছ থেকে সাহায্য পাবেন।
জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকলে করনীয়
আপনার বয়স যদি ১৮ বছরের কম হয় এবং জাতীয় পরিচয় পত্র এন আইডি কার্ড না থাকে, তাহলে আপনাকে অনলাইন বা ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন নিয়ে ই পাসপোর্ট আবেদন করতে হবে।
এবং আপনার বয়স যদি ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে হয় তাহলে আপনাকে জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন এই দুটির যেকোনো একটি দিয়ে আপনিই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারেন।
আর যদি আপনার বয়স ২০ বছরের বেশি হয়, তাহলে অবশ্যই আপনাকে বাধ্যতামূলক জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে আবেদন করতে হবে। আপনার কাছে যদি জাতীয় পরিচয় পত্র বা স্মার্ট কার্ড না থাকে বা না পেয়ে থাকেন তাহলে জাতীয় পরিচয় পত্র অনলাইন কপি ডাউনলোড করে সেটা দিয়ে আবেদন করতে পারবেন।
শিশুদের ই পাসপোর্ট করার নিয়ম
শিশুদের ই পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে,অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের পাশাপাশি পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি সংযুক্ত করা বাধ্যতামূলক।
তাহলে জেনে নিন শিশুদের ই পাসপোর্ট করতে কি কি প্রয়োজন
পিতা-মাতার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি
শিশুর অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ।
আবেদন ফরম (online application summary)
পাসপোর্ট ফ্রি পরিশদে চালান কপি।
3r সাইজের ছবি এবং ল্যাব প্রিন্ট করা গ্রে কালারের ব্যাকগ্রাউন্ড হতে হবে।
যদি পুরাতন পাসপোর্ট থাকে তাহলে তার ফটোকপি লাগবে
ইলেক্ট্রিসিটি বিল এর কপি অথবা গ্যাস বিল এর কপি
চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট
পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে পাসপোর্ট হারানোর জিডি কপি ইত্যাদি লাগতে পারে।
অনলাইনে ফরম পূরণ করার কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা
- আপনি যদি আগে কোন পাসপোর্ট করে থাকেন তাহলে ফরম পূরণের সময় অবশ্যই YES দিবেন আর যদি না থাকে তাহলে NO দিবেন
- আপনার বর্তমান ঠিকানা এবং আপনার স্থায়ী ঠিকানা সঠিকভাবে দিবেন
- আপনার পিতা মাতার নাম তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী দিবেন
- আপনার স্ত্রী বা স্বামীর নামও জাতীয় পরিচয় পত্রে যেভাবে আছে সেভাবেই লিখবেন
- আপনার পাসপোর্টের ধরন কেমন হবে, কত পৃষ্ঠার এবং ডেলিভারি পদ্ধতি সাধারণ নাকি জরুরী তা নির্বাচন করুন।
- আপনার সাথে ইমারজেন্সি যোগাযোগ করার জন্য আপনি আপনার মা-বাবা ভাই-বোন অথবা পরিবারের কোন একটি সদস্যে ঠিকানা এবং মোবাইল নাম্বার দিবেন।
ই পাসপোর্টের ব্যাংক ড্রাফ্ট এবং ফি জমা দেওয়ার নিয়ম
আপনি আপনার নিকটস্থ ব্যাংকের মাধ্যমে খুব সহজেই পাসপোর্টের কি জমা দিতে পারবেন। এর জন্য প্রয়োজন পড়বে আপনার ই পাসপোর্ট এর আবেদন রেজিস্ট্রেশন ফর্ম।
ই পাসপোর্ট এর আবেদন ফরমে যেভাবে তথ্যগুলো দিয়েছেন সেভাবেই নাম পরিচয় পত্র এবং মোবাইল নাম্বার ও পাসপোর্টের পৃষ্ঠা ও মেয়াদ দিতে হবে কি জমা করার ক্ষেত্রে।
আপনার আবেদন করা ফরম এর দুটি প্রিন্ট নিয়ে গেলে যে কোন ব্যাংকে সেখানকার দায়িত্বরত কর্মকর্তাগণ আপনাকে সাহায্য করবে।
পাসপোর্টে ভি জমা করার পর অবশ্যই আপনাকে তাদের কাছ থেকে চালান এর প্রিন্ট কপি নিতে হবে। কারণ এই চালান কপিটি আপনাকে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে।
পাসপোর্টের কি জমা দেওয়ার জন্য আগে শুধুমাত্র সোনালী ব্যাংকেই ফ্রি জমা নেওয়া হতো। এখন নতুন করে আরো পাঁচটি ব্যাংক যুক্ত হয়েছে সেখানে আপনারাও ফি জমা দিতে পারবেন।
পাঁচটি ব্যাংকের নাম হল
- ঢাকা ব্যাংক
- প্রিমিয়াম ব্যাংক
- ওয়ান ব্যাংক
- ব্যাংক এশিয়া
- ট্রাস্ট ব্যাংক
পাসপোর্ট রিনিউ করতে যেসব কাগজ লাগবে
পাসপোর্ট রিনিউ করতে গেলে আপনাকে প্রথমে আবেদনের প্রিন্ট কপি, সনাক্তকরণ ডকুমেন্টের প্রিন্ট কপি, মানি অর্ডার বা ব্যাংক সার্টিফাইড চেক, আগের পাসপোর্টে ডাটা পেজের প্রিন্ট কপি।
সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে জিও বা এনওসি এবং রেজিস্ট্রেশন ফর্ম বা আবেদনের প্রিন্ট কপি ইত্যাদি লাগবে।
পাসপোর্ট রিনিউ ফি কত টাকা
২০২৩ সালের তথ্য অনুসারে পাসপোর্ট রিনিউ এর ফি নতুন পাসপোর্ট এর মতই। এক্ষেত্রে পাঁচ বছর মেয়াদী ৪৮ পৃষ্ঠা পাসপোর্ট ফি ৪ হাজার পঁচিশ টাকা।
আর ৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট ফি ৬ হাজার ৩২৫ টাকা। অন্যদিকে ১০ বছর মেয়াদী ৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট ফি ৫ হাজার ৭৫০ টাকা। এবং ৬৪ পৃষ্ঠা পাসপোর্ট ফি ৮ হাজার ৫০ টাকা।
বায়োমেট্রিক আবেদন
নির্ধারিত ফি পরিশোধ করার পরে এবার আপনাকে বায়োমেট্রিক আবেদনের পালা। এক্ষেত্রে নিয়মিত নিজের একাউন্টে ঢুকে এপয়েন্টমেন্ট দেওয়া হল কিনা তা দেখে নেবেন। অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেওয়া হয়ে গেলে নির্ধারিত দিন তারিখ সময় অনুযায়ী আপনাকে নির্দিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত থাকতে হবে।
এ সময় যে সকল কাগজপত্র লাগবে
- আবেদনপত্রে সারাংশের প্রিন্ট কপি
- শনাক্তকরণ নতুন নথির প্রিন্ট কপি
- ব্যাংক ড্রাফট বা চালান কপি
- পূর্ববর্তী পাসপোর্ট এবং ডাটা পেজের প্রিন্ট কপি
- তথ্য সংশোধনের যে ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
পুলিশ ভেরিফিকেশন
পুলিশ ভেরিফিকেশন পাসপোর্ট পাওয়ার প্রতিক্রিয়াতে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। আপনার যদি পুলিশ ভেরিফিকেশন সনদ না থাকে তাহলে কোনভাবেই পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারবেন না।
বায়োমেট্রিক আবেদনের পরে পুলিশ ভেরিফিকেশন করাতে হবে। তারপর পুলিশ আপনার ঠিকানা ও আবেদনে দেওয়া সম্পূর্ণ তথ্য ঠিকমতো পেলে পুলিশ আপনাকে ভেরিফিকেশনে পজিটিভ দিয়ে দিবেন।
আর যদি আপনার কোন তথ্যের ভুল থাকে যদি আবেদন পামের সাথে মিল না খুঁজে পায় তাহলে আপনার ভেরিফিকেশনটি বাতিল করা হবে এক্ষেত্রে আপনাকে পুনরায় রিওয়ার্ক এর জন্য আবেদন করতে হবে।
ই পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম
আপনার ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদনটি কোন অবস্থায় আছে অর্থাৎ আপনার এই পাসপোর্ট প্রিন্ট হয়েছে কিনা সেটা অনলাইনের মাধ্যমে খুব সহজে চেক করতে পারবেন।
অনলাইনে ই পাসপোর্ট চেক করার জন্য আপনাকে (www.epasport.govt.bd) এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে হবে। এরপর মেনু থেকে check e passport অপশনটি ক্লিক করুন।
তারপর একটি পেজ আসবে, সেই পেজটিতে আপনি আপনার অ্যাপ্লিকেশন আইডি বা অনলাইন রেজিস্ট্রেশন আইডি অর্থাৎ ইমেইল ভেরিফিকেশন এর মাধ্যমে যে আইডি খুলেছেন সেটার নম্বর (উদাহরণস্বরূপ OID10000006754) এবং আপনার জন্ম তারিখ দিয়ে সাবমিট করবেন।
তারপর একটি ক্যাপচা আসবে ক্যাপচা লিখাটি দিয়ে আপনাকে টিক চিহ্ন পূরণ করে চেক বাটন ক্লিক করুন। তারপর আপনি দেখতে পারবেন আপনার পাসপোর্টটি কোন অবস্থানে আছে।
দশ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে?
দশ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট করতে ৫,৭৫০ টাকা থেকে ১৩,৮০০ টাকা পর্যন্ত লাগে। তবে নিশ্চিত ভাবে বলতে গেলে, আপনি কত পৃষ্ঠার পাসপোর্ট আবেদন করেছেন এবং কত দিনে ডেলিভারি নিতে চাচ্ছেন,সেই টাকার পরিমাণ সরকার আগে নির্ধারণ করে দিয়েছে।
শুধুমাত্র ওই টাকার সাথে ২০০ বা ৩০০ টাকা বেশি লাগবে।দোকান থেকে অনলাইন আবেদন করতে এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ফটোকপি করতে।
বি: দ্র: বাংলাদেশ সরকার নির্ধারিত ফি ছাড়া এক টাকাও বেশি লাগে না বা পাসপোর্ট অফিস আপনার কাছ থেকে কোন অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার ক্ষমতা নেই।
৪৮ পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্ট ফি
- আপনি যদি সাধারন-ই পাসপোর্ট ৪৮ পৃষ্ঠার নিতে চান ২১ দিনের মধ্যে,তাহলে আপনাকে ৫,৭৫০ টাকা দিতে হবে।
- আর জরুরী ই পাসপোর্ট ৪৮ পৃষ্ঠা নিতে চান ৭ দিনের মধ্যে, তাহলে আপনাকে ৮,০৫০ টাকা ফি দিতে হবে।
- যদি আপনি অতীত জরুরী ই-পাসপোর্ট নিতে চান ২ দিনের মধ্যে,তাহলে আপনাকে ১০,৩৫০ টাকা ফ্রি দিতে হবে।
৬৪ পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্ট ফি
- আপনি যদি সাধারণ ই-পাসপোর্ট ১০ বছর মেয়াদী ৬৪ পৃষ্ঠার করতে চান ২১ দিনের মধ্যে তাহলে,আপনাকে ৮,০৫০ টাকা ফি দিতে হবে।
- আর যদি জরুরী ই-পাসপোর্ট ১০ বছর মেয়াদী ৬৪ পৃষ্ঠার করতে চান ৭ দিনের মধ্যে তাহলে আপনাকে ১০,৩৫০ টাকা ফি দিতে হবে।
- যদি অতিব জরুরী ই-পাসপোর্ট ১০ বছর মেয়াদী ৬৪ পৃষ্ঠা করতে চান দুই দিনের মধ্যে তাহলে আপনাকে ১৩৮০০ টাকা দিতে ফি হবে।
কি পাসপোর্ট এর ফরম পূরণের নির্দেশনাবলী-
- ই পাসপোর্ট এর আবেদন পত্র অনলাইনে পূরণ করা যাবে।
- ই-পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে কোন কাগজপত্র সত্যায়ন করার প্রয়োজন হবে না।
- ই পাসপোর্ট ফরমে কোন ছবি সংযোজন এবং তা সত্যায়নের প্রয়োজন হবে না।
- জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ এর নিন্মোক্ত বয়স অনুসারে দাখিল করতে হবে।
- জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী আবেদন পত্র পূরণ করতে হবে।
- অপ্রাপ্তবয়স্ক 18 বছরের কম আবেদনকারী যার জাতীয় পরিচয় পত্র নেই, তার পিতা অথবা মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।
- আবেদন বর্তমান ঠিকানা সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস,আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, বিদেশস্ত বাংলাদেশ মিশনে দাখিল করতে হবে।
- ১৮ বছরের নিচে এবং ৬৫ বছরের উর্ধ্বে হলে সকল আবেদনেই পাসপোর্ট এর মেয়াদ হবে পাঁচ বছর এবং ৪৮ পৃষ্ঠার।
- প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিবাহ সনদ কাবিননামা এবং বিবাহর বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে তালাকনামা দাখিল করতে হবে।
- কূটনৈতিক পাসপোর্ট এর জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কনসোলার ও ওয়েলফেয়ার উইন, অথবা ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় বরাবর আবেদন দাখিল করতে হবে।
- দেশের অভ্যন্তরে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ফি এর উপর নির্ধারিত হারে ভ্যাট সহ অন্যান্য চার যদি থাকে অতিরিক্ত হিসেবে প্রদয় হবে।
- অতি জরুরী পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে নিজ উদ্যোগে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ সংগ্রহ করবো আবশ্যিকভাবে আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে।
- দেশের অভ্যন্তরে অতি জরুরী পাসপোর্ট প্রার্থীর লক্ষ্যে আবেদনের সাথে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দাখিল করা হলে অন্যান্য সকল তথ্য সঠিক থাকা সাপেক্ষে দুই কর্ম দিবসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।
- দেশের অভ্যান্ত জরুরি পাসপোর্ট প্রাপ্তির লক্ষ্যে আবেদনের সাথে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দাখিল করা হলে অন্যান্য সকল তথ্য সঠিক থাকা সাপেক্ষে ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।
- দেশের অভ্যন্তরে রেগুলার পাসপোর্ট প্রার্থীর লোকে আবেদনের সাথে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দাখিল করা করা হলে অন্যান্য সকল তথ্য ঠিক থাকা সাপেক্ষে ১৫ কর্ম দিবসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।
- আবেদনের মূল জাতীয় পরিচয় পত্র অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ এবং প্রযোজক ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল সনদ সরকারি আদেশ দাখিল করতে হবে।
- পাসপোর্ট রিসোর ক্ষেত্রমল পাসপোর্ট প্রদর্শন করতে হবে।
- হারানো পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে মূল জিডির কপি কপি দাখিল করতে হবে।
- ছয় বছর বয়সে নিম্নে আবেদনের ক্ষেত্রে তিন আর সাইজের ল্যাপ্রিন ছবি দাখিল করতে হবে।
- পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে অথবা চুরি হলে দ্রুত নিকটস্থ থানায় জিডি করতে হবে। পুনরায় পাসপোর্ট এর জন্য আবেদনের সময় পুরাতন পাসপোর্ট এর ফটোকপি এবং জিডি কপি সহ আবেদন পত্র দাখিল করতে হবে।
সতর্কতা:-
অনেকেই মনে করেন দালাল ছাড়া পাসপোর্ট করা যায় না। বা দালাল ছাড়া পাসপোর্ট করতে গেলে অনেক হয়রানি শিকার হতে হয়। এ ধারণা মোটেও ঠিক না। অযথাই বাড়তি টাকা দিয়ে দালাল ধরবেন না ও দালালের পেছনে খরচ করবেন না।
বর্তমানে অযৌক্তিক হয়রানি অনেকটাই কমে গিয়েছে। এবং সরকারিভাবে পাসপোর্ট করার প্রতিক্রিয়াটি অনেক সহজ করা হয়েছে। তাই দালালের মাধ্যমে বাড়তি টাকা খরচ না করে নিজে নিজেই পাসপোর্ট এর কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারবেন।
আপনি যদি অনলাইনে আবেদন করতে না পারেন তাহলে আপনার নিকটস্থ কোন কম্পিউটারের দোকান থেকে অনলাইন আবেদনটি করিয়ে নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ অপারেটরের সাহায্য নিতে হবে।
যে কিনা সঠিক ও নির্ভুলভাবে আপনার নাম ঠিকানা পূরণ করে দেবে। তবে কোন মাধ্যম ছাড়া নিজে পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে অবশ্যই হাতে সময় নিয়ে পাসপোর্ট এর কাজ শুরু করবেন।
অবশ্যই জরুরি প্রয়োজনে নিজে না করে অন্য কোন মাধ্যমের সাহায্য নিয়ে পাসপোর্ট করাই ভালো। আর পাসপোর্ট আবেদনে ফরম ফিল আপ করার আগে এবং ফিলআপ করার পরে পুরো ফর্মের কয়েক কপি ফটোকপি করে রাখবেন।
অনলাইনে আবেদন করতে গেলে আপনাকে মাত্র ২০০ টাকা সার্ভিস ফি নিতে পারে বা ৩০০ টাকাও নিতে পারে।
Post a Comment