নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম: ধাপে ধাপে সম্পূর্ণ গাইড

ভোটার আইডি কার্ড বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি। যারা নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে চান, তাদের জন্য এই নিবন্ধে বিস্তারিত প্রক্রিয়া তুলে ধরা হলো।


ভোটার হওয়ার যোগ্যতা

নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই নিম্নলিখিত শর্ত পূরণ করতে হবে:

  1. বয়স: ১৮ বছর বা তার বেশি হতে হবে।
  2. বাংলাদেশের নাগরিকত্ব: শুধুমাত্র বাংলাদেশি নাগরিকরা ভোটার হতে পারবেন।
  3. স্থায়ী ঠিকানা: নির্দিষ্ট এলাকার ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার ধাপসমূহ

১. প্রাথমিক প্রস্তুতি
  • আপনার জন্মতারিখ নিশ্চিত করার জন্য জন্মনিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করুন।
  • প্রয়োজনীয় অন্যান্য ডকুমেন্ট যেমন: শিক্ষা সনদ, পিতামাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি প্রস্তুত রাখুন।
  • আপনার ইউনিয়ন, পৌরসভা, বা ওয়ার্ড অফিসে ভোটার তালিকার কার্যক্রম সম্পর্কে খোঁজ নিন।
২. ভোটার নিবন্ধন অফিসে যোগাযোগ করুন
  • আপনার এলাকার নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে যোগাযোগ করুন।
  • সঠিক ফরম পূরণ করার জন্য সাহায্য নিন।
৩. অনলাইনে আবেদন করুন

আপনি চাইলেও অনলাইনে নতুন ভোটার হিসেবে নিবন্ধন করতে পারেন। এর জন্য:

  1. জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের (NID) ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
  2. "New Voter Registration" অপশন নির্বাচন করুন।
  3. ফর্ম পূরণ করে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট স্ক্যান করে আপলোড করুন।
  4. আপনার ফোন নম্বর এবং ইমেইল দিয়ে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন।
৪. বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান করুন
  • ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ছবি এবং চোখের রেটিনা স্ক্যান করার জন্য নির্বাচন অফিসে যান।
  • আবেদন প্রক্রিয়ার একটি কপি সংগ্রহ করুন।
৫. ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করুন
  • আপনার তথ্য যাচাইয়ের পর নির্বাচন কমিশন আপনার নাম স্থানীয় ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করবে।
  • নিশ্চিত করতে ভুলবেন না যে আপনার সঠিক তথ্য অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
৬. ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করুন
  • প্রাথমিকভাবে একটি পেপার কার্ড (লেমিনেটেড কপি) সংগ্রহ করুন।
  • পরবর্তীতে স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করার জন্য বিজ্ঞপ্তি অনুসরণ করুন।

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার সময় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট

  1. জন্মনিবন্ধন সনদ
  2. শিক্ষা সনদ (যদি থাকে)
  3. পিতামাতার ভোটার আইডি কার্ডের কপি
  4. ঠিকানার প্রমাণপত্র (যেমন: বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল)

নতুন ভোটার কার্ড করার সময় কত ফি লাগে?

নতুন ভোটার আইডি কার্ড তৈরি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। তবে স্মার্ট কার্ড তৈরি বা হারানো কার্ড পুনঃপ্রাপ্তিতে নির্দিষ্ট ফি প্রযোজ্য।


নতুন ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করতে কোনো টাকা লাগে না। এটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করা হয়। তবে হারিয়ে যাওয়া কার্ড পুনরুদ্ধার বা স্মার্ট কার্ড পেতে নির্ধারিত ফি দিতে হয়।

স্মার্ট কার্ড বা হারানো কার্ডের জন্য ফি

১. হারানো বা ক্ষতিগ্রস্ত কার্ড পুনরুদ্ধার:

  • প্রথমবার পুনরুদ্ধারের জন্য ফি: ২৩১ টাকা।
  • দ্বিতীয়বার বা পরবর্তীতে পুনরুদ্ধারের জন্য ফি: ৩৪৫ টাকা।

২. তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে ফি:

  • সাধারণ সংশোধনের জন্য: ২৩০ টাকা।
  • বড় ধরনের সংশোধনের (যেমন নাম, জন্ম তারিখ) জন্য: ৩৪৫ টাকা।

৩. স্মার্ট কার্ড পাওয়ার জন্য ফি:

  • প্রথমবার স্মার্ট কার্ড বিনামূল্যে দেওয়া হয়। তবে হারিয়ে গেলে বা পুনঃপ্রাপ্তির জন্য নির্ধারিত ফি দিতে হয়।

পেমেন্ট প্রক্রিয়া

অনলাইন মাধ্যমে পেমেন্ট করার জন্য বিকাশ, রকেট, অথবা নির্বাচন কমিশন অফিসের নির্ধারিত ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়া যায়।

আপনার নির্দিষ্ট পরিস্থিতি অনুযায়ী যদি অতিরিক্ত ফি সম্পর্কে জানতে চান, নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করুন অথবা NID ওয়েবসাইট থেকে বিস্তারিত তথ্য দেখুন।


সাধারণ সমস্যাগুলোর সমাধান (FAQ)

প্রশ্ন ১: নতুন ভোটার হতে কত সময় লাগে?
উত্তর: সাধারণত ৭-১৫ কার্যদিবস সময় লাগে।

প্রশ্ন ২: যদি কোনো ভুল তথ্য যুক্ত হয়, কী করব?
উত্তর: ভুল তথ্য সংশোধনের জন্য NID ওয়েবসাইটে লগইন করে সংশোধনের আবেদন করতে পারবেন।

প্রশ্ন ৩: বায়োমেট্রিক তথ্য নেওয়ার সময় কী নিয়ে যেতে হবে?
উত্তর: আবেদন ফরমের একটি কপি এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট নিয়ে যান।

প্রশ্ন ৪: আমি কি নিজেই অনলাইনে আবেদন করতে পারব?
উত্তর: হ্যাঁ, আপনি অনলাইনে নিজে আবেদন করতে পারবেন। তবে বায়োমেট্রিক তথ্য দেওয়ার জন্য অবশ্যই অফিসে যেতে হবে।


উপসংহার

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করা এখন অনেক সহজ। সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আপনি সহজেই আপনার ভোটার আইডি কার্ড পেতে পারেন। এটি শুধু পরিচয়ের দলিল নয়, বরং এটি বিভিন্ন সরকারি ও ব্যক্তিগত সেবা গ্রহণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


Post a Comment

Post a Comment (0)

Previous Post Next Post

Basketball

Racing